এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস [২০১৭] | পিরামিডের দেশে এসাসিন্স ক্রিড! [রিভিউ]

মিশর! পিরামিডের শহর নিয়ে হলিউডে অনেকগুলো মুভি রয়েছে। কিন্তু মিশর নিয়ে ভিডিও গেমস কিন্তু আমরা অহরহ দেখতে পাই না। বর্তমান যুগে জনপ্রিয় ভিডিও গেমস সিরিজগুলোর কোনটিও কিন্তু এখনো আমরা মিশরের লোকশন সেটিংস দেখতে পাই নি। কল অফ ডিউটি সিরিজের কোন গেমস এখনো মিশরের সেটিংসয়ে তৈরি করা হয়নি, ফার ক্রাই সিরিজটি আমাদের পাশের দেশ নেপালের হিমালয় অঞ্চল পর্যন্ত এসেছে, অন্যদিকে গ্রান্ড থেফট অটো সিরিজটি তাদের ফিকশনাল আমেরিকান সিটিতে বিগত ২০ বছর ধরে পড়ে রয়েছে।

কিন্তু ইউবিআই সফটের তুমুল জনপ্রিয় ভিডিও গেমস সিরিজ এসাসিন্স ক্রিড এবার তাদের লেটেস্ট গেমটিতে মিশরের সেটিংস নিয়ে আমাদের সামনে চলে এসেছে। তাও কিন্তু মর্ডান যুগের মিশর নয়, সেই আদিকালের ফারাও রাজাদের সময়কালের মিশরকে এবার আমাদের সামনে ভিডিও গেমস রূপে নিয়ে এলো ইউবিআই সফট। হ্যাঁ কথা বলছি এসাসিন্স ক্রিড সিরিজের সর্বশেষ লেটেস্ট ভিডিও গেম এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস কে নিয়ে।

হিস্টোরিক্যাল ধাঁচের সাইন্স ফিকশন গেম সিরিজের এবারের গেমটি আদিকালের মিশরের সেটিংসয়ে নির্মিত হয়েছে; এবং গেমটির গ্রাফিক্স, গেমপ্লে এবং স্টোরিলাইন সবকিছুই একদম নতুন করে সাজানো হয়েছে। অর্থ্যাৎ গেমটি এসাসিন্স ক্রিড সিরিজের একটি রিবুট আকারে তৈরি করা হয়েছে। ১০ বছরের এসাসিন্স ক্রিড সিরিজের সমস্ত গেমসের প্রিকুয়্যাল স্টোরিলাইন অরিজিনস গেমটিতে আনা হয়েছে এবং বলা বাহুল্য যে এসাসিন্স ক্রিড সিরিজের আরেকটি ব্যবসা সফল গেমের খাতায় ইতিমধ্যেই অরিজিনস গেমটি তার নাম লিখে ফেলেছে।

Ubisoft Montreal দ্বারা নির্মিত এবং Ubisoft কোম্পানির প্রকাশিত এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস হচ্ছে একটি একশন-এডভেঞ্চার ভিডিও গেম । গেমটি এসাসিন্স ক্রিড সিরিজের ১০তম মূল ইন্সটলমেন্ট এবং গেমটি ২০১৫ সালের এসাসিন্স ক্রিড সিন্ডিকেইট গেমের সাকসেসর। গেমটি মাইক্রোসফট উইন্ডোজ, প্লে-স্টেশন ৪ এবং এক্সবক্স ওয়ান গেমিং কনসোলের জন্য ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাপী মুক্তি পেয়েছে। গেমটি খ্রিষ্টপূর্ব ৪৯-৪৭ সালের মিশরের পটভূমিতে সেট করা হয়েছে। অনান্য এসাসিন্স ক্রিড গেমসগুলোর মতোই এখানে বাস্তবিক দুনিয়ার বিভিন্ন ঘটনাকে পটভূমি আকারে নিয়ে কাল্পনিক হিস্টোরিলাইন গেমটিতে প্রয়োগ করা হয়েছে। সিরিজের পরবর্তী ভিডিও গেম Assassin’s Creed Odyssey এ বছরের অক্টোবরে মুক্তি পবার কথা রয়েছে।

 

নির্মাতা: Ubisoft Montreal
প্রকাশ করেছে: Ubisoft
সিরিজ: Assassins’s Creed
ইঞ্জিণ: AnviNext 2.0
খেলা যাবে: মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ভিক্তিক পিসিতে,
প্লেস্টেশন ৪ এবং এক্সবক্স ওয়ান কনসোলে
খেলার ধরণ: একশন এডভেঞ্চার, স্টেলথ
মোড: সিঙ্গেল প্লেয়ার
মুক্তি পেয়েছে: ২৭ অক্টোবর, ২০১৭ সালে
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস: *এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস একটি হেভিওয়েট ভিডিও গেম। গেমটি ৭২০ রেজুলেশনে লো সেটিংস দিয়ে খেলতে তোমার যা যা চাই:

২য় প্রজন্মের ইন্টেল কোর আই ৫ ২.৫ গিগাহার্জ প্রসেসর
কিংবা এএমডি FX-6350 প্রসেসর
গিগাবাইট জিটিএক্স ৬৬০ কিংবা এএমডি রাডিয়ন আর৯ ২৭০ গ্রাফিক্স কার্ড
৬ গিগাবাইট র‌্যাম
ডাইরেক্ট এক্স ১১ সার্পোটেড মাদারবোর্ড
উইন্ডোজ সেভেন ৬৪ বিট অপারেটিং সিস্টেম
৫০ গিগাবাইট ফ্রি হার্ডডিক্স স্পেস

বি:দ্র: গেমটির সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারফরমেন্স অংশটি দেখো!

এসাসিন্স ক্রিড সিরিজটি তার হিস্টোরিক্যাল পটভূমি এবং অসাধারণ গেমপ্লের জন্য গেমাদের কাছে জনপ্রিয়। ২০০৭ সালে সিরিজের প্রথম গেমটি থেকেই সিরিজ গেমারদের কাছে জনপ্রিয় হতে থাকে। বিশেষ করে এসাসিন্স ক্রিড ২ গেমটি এখনো অনেকের মনেই গেঁথে রয়েছে। আর সিরিজের লেটেস্ট গেম এসাসিন্স ক্রিড একটি ইউনিক পটভূমি নিয়ে আমাদের সামনে চলে এলো। হ্যাঁ মিশরের মরুভুমিতে গভীর রাত্রে ঘোড়ায় চড়ে মিশন খেলা কিংবা পড়ন্ত বিকেলে পিরামিডের পাশে সূর্যাস্ত উপভোগ সবই করা যাবে এবারের এসাসিন্স ক্রিড গেমটিতে। কিন্তু কোনো ভিডিও গেমই ১০০ ভাগ পারফেক্ট নয়।

প্রতিজন পছন্দ মোতাবেক কোনো কিছু তৈরি করা একদমই অসম্ভব ।  তাই এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস গেমটিতে চমৎকার ভিজুয়্যাল, ক্যারেক্টার ডিজাইন থাকলেও গেমটির গেম-প্লে নিয়ে অনেকেরই ভিন্নমত রয়েছে। আর বিভিন্ন টেকনিক্যাল ইস্যু তো রয়েছেই।

সিরিজের আগের গেমসগুলোর মতোই এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস হচ্ছে একটি একশন এডভেঞ্চার স্টেলথ গেম যেটি তুমি থার্ড পারসন ভিউতে খেলতে পারবে। গেমটিতে তোমাকে স্টোরিলাইনে এগোতে হলে অবজেক্টিভ পূরণ করে বিভিন্ন লাইনার মিশন পার করতে হবে। গেমটিতে তুমি খেলতে খেলতে এক্সপেরিয়েন্স পয়েন্ট অর্জন পারবে এবং নতুন নতুন স্কিলও অর্জন করতে পারবে। স্টোরিলাইন কোয়েস্ট ছাড়াও গেমটিতে তুমি স্বাধীন ভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতে পারবে। ঘুরে বেড়ানোর জন্য তুমি ব্যবহার করতে পারবে ঘোড়া, উট কিংবা ছোট ছোট বোট। স্টোরিলাইন কোয়েস্ট ছাড়াও গেমটিতে অপশনাল সাইড কোয়েস্ট এবং বিভিন্ন অস্ত্র ও যন্ত্রপাতি আনলক করার মিশন। গেমটিতে সিরিজের আগের গেমসগুলো Eagle Vision ফিচারটি নেই; এর বদলে গেমটিতে কম্প্যানিয়ন হিসেবে রয়েছে Bonelli’s Eagle যার নাম Senu ।

সেনুর ঈগলের উপর গেমটিতে তুমি কনট্রোল নিয়ে বিভিন্ন স্থানের উপর স্কাউটিং করতে পারবে। শত্রুদের চিহ্নিত করে আবারো প্লেয়ারের কাছে ফিরে এলে তুমি eagle vision এর মতো শত্রুদের চলাফেলা ট্রাক করতে পারবে। এছাড়াও সে সময়কার বিভিন্ন হিংস জন্তুদের সাহায্য নিয়েও তুমি কমবাটে সুবিধা নিতে পারো। গেমটিতে নেভি কমবাট, আন্ডারওয়াটার এপ্লোরেশন এবং বড় বড় টম্ব বেয়ে উঠার ফিচারগুলো আবারে ফিরে এসেছে। এছাড়াও গেমটিতে নতুন ফিচার হিসেবে রাখা হয়েছে এরিনা ভিক্তিক লড়াই সিস্টেম। গেমটির শহরগুলোতে বিভিন্ন এরিনা রয়েছে যেগুলোতে তুমি অংশগ্রহন করে গেমটিতে অতিরিক্ত অস্ত্র এবং যন্ত্রপাতি আনলক করতে পারো। এরিনাতে যে সকল বস রয়েছে তা স্টোরিলাইন বা ওপেন ওয়ার্ল্ডে তুমি পাবে না।

অরিজিনস গেমটিতে তোমাকে Bayek নামক একজন Medjay এর ভূমিকায় খেলতে হবে। Medjay কথাটি তুমি আগেও হয়তো হলিউডের Mummy ছায়াছবিগুলোতে শুনে থাকবে। Bayek এবং তার স্ত্রী Aya তখনকার সময়ের রাজকন্যা Cleopatra এর বিশেষ এলাইট গুপ্তচর হিসেবে কাজ শুরু করে এবং গেমটির প্রাইমারি ভিলেন গ্রুপ Knights Templar দের হত্যা করা শুরু করে  এবং প্রাচীন মিশরে সিভিল যুদ্ধের সূচনা করে।

তবে অনান্য এসাসিন্স ক্রিড গেমসগুলোর মতোই এই গেমটিতে ও তুমি Bayek এর স্টোরিলাইন  তার ডিএনএকে Animus ডিভাইসের মাধ্যমে উপভোগ করতে পারবে। গেমটিতে Bayek এর মমি থেকে উদ্ধারকৃত DNA ডাটা থেকেই Layla Hassan নামের একজন Abstergo কর্মচারী তোমাকে এনিমাস ডিভাইসের সাহায্যে Bayek এর জীবনী এক্সপ্লোর করতে দেবে। আর এখানেই এসে গেমটির মর্ডান স্টোরিলাইন তোমার কাছে ধীরে ধীরে পরিস্কার হয়ে উঠবে।

গেমটির স্টোরিলাইনেই তোমাকে প্রাচীন মিশরের বেশ কয়েকটি ঐতিহাসিক স্থানের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে। এছাড়াও স্টোরিলাইনের বাইরে গিয়েও তুমি এই বিশাল প্রাচীন মিশরটিকে এক্সপ্লোর করতে পারো। গেমটি মূলত ৫টি ভিক্তি রয়েছে; এগুলো হলো combat, stealth, gear management, crafting এবং exploraiton । গেমটি নির্মাণে সময় লেগেছে প্রায় ৪ বছর এবং গেমটি সাম্প্রতিক সময়ের ওপেন ওর্য়াল্ড RPG গেমসগুলো (The Witcher 3) থেকে বিভিন্ন তথ্যকে সাহায্যকারী Clue হিসেবে অরিজিনস গেমটিতে নিয়ে আসা হয়েছে। গেমটিতে প্রাচীন মিশরের ২০টির বেশি অঞ্চল রয়েছে। যা টেকনিক্যালি গেমটির শুরু থেকেই একসেস করা যাবে। তবে স্টোরিলাইন সম্পূর্ণভাবে শেষ করার আগে হয়তো কিছু কিছু অঞ্চলে তুমি প্রবেশাধিকার পাবে না।

গেমটিতে স্টোরিলাইন মিশনগুলো একসেস করার জন্য প্লেয়ার Bayek কে ১ থেকে ৪০ টি লেভেলে সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন স্টোরিলাইন মিশন খেলতে তোমাকে নিদির্ষ্ট পরিমাণের লেভেল এক্সপেরিয়েন্স অর্জন করতে হবে। এই এক্সপেরিয়েন্সগুলো তুমি সাইড কোয়েস্ট এবং এক্সপ্লোরেশন থেকে অর্জন করতে পারবে। গেমটির দুটি ডিএলসিতে এই লেভেল ৫৫ পর্যন্ত উঠবে। সাইড কোয়েস্টগুলো অপশনাল হলেও মূল স্টোরিলাইনে এডভান্স হওয়া জন্য তোমাকে বেশ কয়েকটি সাইড মিশন বাধ্যতামূলকভাবে খেলতে হবে। তোমার পিসি যদি গেমটিতে ভালোমতো চালাতে পারে তাহলে আমি মনে করবো গেমটি তোমার কাছে বেশ উপভোগ্যই মনে হবে।

এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস গেমটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের শুরু দিকে। এসাসিন্স ক্রিড ৪ – ব্ল্যাক ফ্ল্যাগ গেমটির কাজ সম্পন্ন করার পর পরেই নির্মাতারা অরিজিনস গেমটির নির্মাণ কাজ শুরু করে দেন। উল্লেখ্য যে, গেমটির মুক্তি আগে সিরিজের গেমসগুলো প্রতি বছরে মুক্তি পেতে থাকে। কিন্তু ২০১৫ সালে এসাসিন্স ক্রিড সিন্ডিকেইট গেমটির ব্যবসা ভালো মতো করতে না পারায় অরিজিনস গেমটি ২০১৬ সালে মুক্তি না দিয়ে ২০১৭ সালে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ডিএলসি

এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস গেমটিতে তিনটি ডিএলসি বা Downloadable Content রয়েছে। যা প্লেয়াররা অনলাইন গেম সার্ভিস থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবে। ডিএলসিগুলো হলো The Hidden Ones, Discovery Tour এবং The Curse of the Pharaohs ।

The Hidden Ones:

The Hidden Ones হচ্ছে এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস এর একটি স্টোরিলাইন ভিক্তিক ডিএলসি যেখানে গেমটির স্টোরিলাইনে আরো কিছু কাহিনীসুত্র যোগ করবে। The Hidden Ones ডিএলসির স্টোরিলাইন মূল গেমটির স্টোরিলাইনের ৪ বছর পরের সময়ে সেট করা হয়েছে। এখানে তোমাকে Sinai Penninsula অঞ্চলে গিয়ে খেলতে হবে। নতুন স্টোরিলাইন ছাড়াও The Hidden Ones প্যাকে তুমি পাবে নতুন একটি আউটফিট, দুটি লেজেন্ডারি অস্ত্র সেট, নতুন জুতো এবং আরো অনেক কিছু।

Discovery Tour:

এটি হচ্ছে একটি এডুকেশনাল মোড। এই ডিএলসিতে তুমি প্রাচীন মিশরের ইতিহাস এবং প্রতিদিনের লাইফলাইন সম্পর্কে জানতে পারবে। এই মোডে গেমটিতে কোনো স্টোরিলাইন, সাইড কোয়েস্ট, শত্রু পক্ষ, টাইম লিমিট এবং কমবাট সিস্টেম থাকবে না। এই মোডে তুমি গেমটিতে প্রাচীন মিশরের একটি এডুকেশনাল ট্যুর ঘরে বসেই দিতে পারবে। Discovery Tour ডিএলসিটি এ বছরের ফেব্রুয়ারীতে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

The Curse of the Pharaohs:

এই ডিএলসিটি বেশ রোমাঞ্চকর! কারণ এতে রয়েছে প্রাচীন মিশরের মিথোলজি ভিক্তিক কোয়েস্ট লাইন। এখানে তোমাকে বিভিন্ন জনপ্রিয় ফারাও এবং মিথোলজিক্যাল দৈত্যদের বিরুদ্ধে খেলতে হবে। অনেকটা The Mummy ছবির মতোই। নতুন কোয়েস্টের সাথে ডিএলসিতে তুমি পাচ্ছো নতুন আউটফিট, নতুন গিয়ার এবং অস্ত্র। The Curse of the Pharaohs ডিএলসিটি এ বছরের মার্চে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

পারফরমেন্স ইস্যু

এবার আসি কাজের কথায়। অর্থ্যাৎ প্যাড়ার কথায়! হ্যাঁ দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস গেমটি একটি হেভি গ্রাফিক্সযুক্ত গেম এবং গেমটিতে খেলতে হলে তোমার চাই একটি মিডিয়াম মানের পাওয়ারফুল কম্পিউটার। হ্যাঁ গেমটির অফিসিয়াল মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট পোষ্টটির মাঝামাঝিতে আমি দিয়ে দিয়েছি। গেমটি সর্বনিম্ন গ্রাফিক্স দিয়ে ৭২০ রেজুলেশনে খেলার জন্যেও হলে তোমার চাই ৬ গিগাবাইট র‌্যাম এবং ২ গিগাবাইটের শক্তিশালি গ্রাফিক্স কার্ড। আমি কিন্তু ৭২০ রেজুলেশনে ৩০ FPS এর কথা বলছি। ১০৮০ রেজুলেশনে গেমটি 30 FPS গতিতে সবকিছু হাই গ্রাফিক্স সেটিংস দিয়ে খেলতে হলে তোমার চাই একটি জিটিএক্স ৭৬০ বা রাডিয়ন আর৯ ২৮০এক্স গ্রাফিক্স কার্ড, পঞ্চম প্রজন্মের কোর আই ৭ প্রসেসর বা এএমডি FX-8350 প্রসেসর।

আর প্রাচীণ মিশরের আসল মজা পেতে হলে গেমটি তোমাকে অবশ্যই আল্ট্রা হাই গ্রাফিক্সে ভালো রেজুলেশনে খেলা উচিত। আর এখানেই ঘটে বিপত্তি। কারণ গেমটি আল্ট্রা গ্রাফিক্সে চালাতো তোমার চাই একটি হাই পারফরমেন্সযুক্ত গেমিং পিস! তুমি কি জানো এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস গেমটির জন্য এনভিডিয়া আলাদা ভাবে তাদের GTX 1080 Origins Edition বাজারে ছেড়েছে? মানে গেমটি কতটুকু গ্রাফিক্স খায় তা অবশ্যই হয়তো তুমি বুঝতে পেরেছো।

গেমটি হাই গ্রাফিক্সে ১০৮০ রেজুলেশনে খেলতে হলে তোমার চাই একটি লাখ টাকার উপরের গেমিং পিসি

গেমটিতে 60 FPS গতিতে 1920 x 1080 রেজুলেশনে আল্ট্রা হাই গ্রাফিক্স দিয়ে খেলার জন্য তোমার অবশ্যই চাই অষ্টম প্রজন্মের কোর আই ৭ প্রসেসর, এনভিডিয়া জিটিএক্স ১০৮০ বা এনভিডিয়া জিটিএক্স ১০৮০ টিআই গ্রাফিক্স কার্ড এবং ১৬ গিগাবাইট র‌্যাম। আর দুঃখের বিষয় হচ্ছে বর্তমানে এই দুটি গ্রাফিক্স কার্ড ছাড়া অন্য কোনো গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে তুমি গেমটিকে আল্ট্রা হাই সেটিংস দিয়ে 1920 রেজুলেশনে ৬০ FPS পাবে না। আর এই গ্রাফিক্স কার্ডগুলো লাখ টাকার উপরে সেটা আর নতুন করে কিছু বলার নেই। দুঃখের বিষয় আরো হচ্ছে যে অরিজিনস গেমটি ক্রসফায়ার গ্রাফিক্স সিস্টেম এবং SLI সিস্টেম সার্পোট করে না, অর্থ্যাৎ দুটি গ্রাফিক্স কার্ড মিলিয়ে আমরা গেমারা মাঝে মাঝে কমটাকায় উন্নত মানে গেমিং পিসি বিল্ড করি সেটা এই গেমটি সার্পোট করবে না।

আর আল্ট্রা গ্রাফিক্স সেটিংস দিয়ে 4K রেজুলেশনে গেমটি উপভোগ করতে হলে সেই GTX 1080 Ti Origins Edition গ্রাফিক্স কার্ড ছাড়া তোমার আর কোনো উপায় নেই।

এসাসিন্স ক্রিড অরিজিনস একটি চমৎকার ভিডিও গেম। গেমটি গ্রাফিক্সের পাশাপাশি স্টোরিলাইন, ক্যারেক্টার ডিজাইন, সাউন্ড এবং গেমপ্লে সবগুলো দিকে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। গেমটি ভালো গ্রাফিক্স দিয়ে তুমি খেলতে পারলে প্রাচীন মিশরের আসল সৌন্দর্য্য তুমি উপভোগ করতে পারবে। মরুভূমির আকাশে পাখি উড়ে যাওয়া, পিরামিডের পাশে ধুলোবালি উড়ে যাওয়া, নীল নদের পানির ছলছলানি ইত্যাদি প্রত্যেকটি গ্রাফিক্স ডিটেইলস গেমটিতে অসম্ভব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রাচীন মিশরের ঐতিহাসিক পটভূমিতে এসাসিন্স ক্রিডের নিজস্ব কাল্পনিক স্টোরিলাইন গেমটিতে সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। আশা করবো গেমটি খেলে তোমাদেরও একই রকমের ভালো লাগবে। আজকের রিভিউ এখানেই শেষ করছি । তবে আর যাই করো না কেন ইন্টারনাল গ্রাফিক্স কার্ডে কিংবা গ্রাফিক্স কার্ড ছাড়া গেমটি কম্পিউটারে ইন্সটল না করাটাই উত্তম বলে আমি মনে করি!

Images: Shutterstock.com

About the author

ফাহাদ

Add comment

Categories