ওয়ার্ডপ্রেস গীকঃ পর্ব ১; ওয়ার্ডপ্রেস পরিচিতি (বেসিক ১) [ফ্রী কোর্স!]

সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি ওয়্যারবিডি এর নতুন ওয়ার্ডপ্রেস গীক সিরিজটি। এতদিন আপনারা ওয়্যারবিডিে টেকনোলজি এক্সপ্লেইনড, গ্যাজেটস ইত্যাদি বিষয়ে আর্টিকেল বেশি পেয়েছেন, আশা করি অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। তবে থিওরি আর্টিকেলের পাশাপাশি এবার থেকে নিয়মিতভাবে শুরু হতে যাচ্ছে ওয়্যারবিডি এর বেশ কিছু প্র্যাকটিক্যাল সিরিজ। তার ভেতর এই হল একটি “ওয়ার্ডপ্রেস গীক” সিরিজ। মূলত এই সিরিজ থেকে আপনি আপনি জানবেন একটি ওয়েবসাইট তৈরি থেকে শুরু করে পরবর্তী ধাপ, যাবতীয় সবকিছু!

বিগেনারদের কথা মাথায় রেখে ওয়ার্ডপ্রেস গীক সিরিজটি একদম ওয়ার্ডপ্রেস এর বেসিক থেকে শুরু করা হবে। অনেকে হয়ত ইতিমধ্যে এসব বিষয়ে জানেন, তবুও আপনারাও সিরিজটি অনুসরন করতে থাকুন। বেসিক থেকে আমরা ধীরে ধীরে প্রো লেভেলে সিরিজটিকে নিয়ে যাবো, এতে ওয়্যারবিডি এর সকল শ্রেনীর ভিজিটর – এ বিষয়ে সমান ধারনা পাবে।

এখানে অনেকেই হয়ত আছেন, যারা নিয়মিত ওয়্যারবিডি ভিজিট করেন, প্রযুক্তির নানা টার্ম সম্পর্কে ভালো জানেন, তবে ওয়েবসাইট তৈরি এবং মেইনটেনেন্স তথা দেখাশোনা, পরিচালনা বিষয়ে তেমন কিছু জানেন না, আপনার মনে প্রশ্ন থাকতেই পারে, কিভাবেই বা ওয়েব সাইট তৈরি করে, কিভাবে সেটা গুগলে আসে? বন্ধুরা ধৈর্য্য ধরুন, আশা করি নিয়মিত ওয়্যারবিডি এর এই সিরিজ এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বিষয়ক এসব প্রশ্নের উত্তর তো পাবেনই, পাশাপাশি আপনিও রপ্ত করে ফেলতে পারবেন ওয়েবসাইট বানানোর সবকিছু। আসলে যারা ভাবেন ওয়েবসাইট বানাতে ওয়েব ডিজাইন, কোডিং শেখা লাগে তাদের ভুল ভাঙতে চলেছে।


ওয়েব সাইট

ওয়েব সাইট কি, এ ব্যাপারে জ্ঞান দেওয়ার নিশ্চয় প্রয়োজনীয়তা নেই, বইয়ের সংজ্ঞা না জানলেও, আপনি নিশ্চয় জানেন ওয়েবসাইট কি জিনিষ। ইন্টারনেটের এক বিশাল অংশ জুড়ে কোটিকোটি ওয়েবসাইট ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। গুগল থেকে শুরু করে অবশ্যই আপনাদের প্রিয় ওয়্যারবিডি ও একটি ওয়েবসাইট। তবে ইন্টারনেট আর ওয়েব কিন্তু এক জিনিষ নয়, যাই হোক, এখানে দ্যা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব নিয়ে তেমন কিছু বলবো না, এ নিয়ে ডেডিকেটেড আর্টিকেল রয়েছে যা এখান থেকে চেক করতে পারে।

ওয়ার্ডপ্রেস কি, কেন প্রয়োজনীয়, সেটা বোঝার পূর্বে অবশ্যই ওয়েবসাইট কিভাবে কাজ করে বা কিভাবে নর্মাল ওয়েবসাইট বানানো হয় এই ব্যাপারে বেসিক জ্ঞান থাকা প্রয়োজনীয়। যদি আপনি নাই জানেন ওয়েবসাইট আসলে কিভাবে তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেসের গুরুত্ব বোঝা অনেকটা মুশকিল হতে পারে, কেনোনা অগুনতি উপায়ে আপনি ওয়েবসাইট বানাতে পাড়বেন, তাহলে ওয়ার্ডপ্রেসই কেন? চলুন সহজ ভাষায় বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিষ্কার করার চেষ্টা করা যাক।

দেখুন, পুস্তকের ভাষায় ওয়েবসাইট বলতে একটি ডিরেক্টরি বুঝানো হয় বা বলতে পারেন একটি ফোল্ডার, যেখানে এক বা একাধিক ওয়েব পেজের সমন্বয় রয়েছে। যদি কথা বলি আমাদের ওয়্যারবিডি ওয়েবসাইট নিয়ে, তো এখানে প্রথমত একটি হোমপেজ রয়েছে এবং তারপরে হোমপেজের সাথে আরো পেজ লিঙ্ক করা রয়েছে, এভাবে কয়েক হাজার ওয়েবপেজ মিলিত হয়ে সম্পূর্ণ ওয়্যারবিডি ওয়েবসাইট’টি গঠিত হয়েছে। শুধু ওয়্যারবিডি নয়, দুনিয়ার সকল ওয়েবসাইট একই নীতিতে কাজ করে। এখন কথা বলা যাক ওয়েবপেজ নিয়ে, যেটা একটি ওয়েবসাইটের অণু বলতে পারেন। আর ওয়েবপেজের মধ্যে আরো অনেক জিনিষ থাকে, যেমন ইমেজ, স্টাইল ফাইল, বিভিন্ন কোড, স্ক্রিপ্ট — এগুলোকে আপনি একটি ওয়েবসাইটের পরমানু বলতে পারেন। তো বুঝতেই পাড়ছেন, একটি ওয়েবসাইট সম্পূর্ণ হতে অনেক ওয়েবপেজের দরকার আর ওয়েবপেজ সম্পূর্ণ করতে আরো অনেক উপাদান প্রয়োজনীয়।

ওয়েব সার্ভার নিয়ে একটি বিস্তারিত আর্টিকেল রয়েছে, যেখানে অনেক স্পষ্ট আলোচনা করা হয়েছে, কিভাবে ওয়েব সার্ভার এবং সেখানে ওয়েবসাইট হোস্ট করা থাকে। চলুন এই আর্টিকেলে আবার আরেকবার ভিন্ন স্টাইলে বিষয়টি আলোচনা করার চেষ্টা করি। কল্পনা করুণ আপনার কম্পিউটারের একটি সাধারণ ফোল্ডার বা আপনার মোবাইলের একটি সাধারণ ফোল্ডারের কথা — যেখানে আপনি কোন ফাইল স্টোর করে রেখেছেন। এখন কম্পিউটারের কোন ফোল্ডারে থাকা ফাইল কিভাবে অ্যাক্সেস করা সম্ভব হয়? অবশ্যই আপনাকে ঐ ফোল্ডার নামটি খুঁজে পেতে হয়, তারপরে ফোল্ডারটি ওপেন করে ফাইল নাম অনুসারে ফাইলটি অ্যাক্সেস করতে হয়, তাই না? যদি আপনি ফাইলটি সরাসরি অ্যাক্সেস করতে চান, তাহলে আপনার ঐ ফাইলটির হট লিঙ্ক প্রয়োজনীয় হবে। মানে, “C:\TecHubs\Img\Demo-TH-Logo.png” এরকম একটি লিঙ্ক, তাহলে ঐ ফাইলটি সরাসরি অ্যাক্সেস করা সম্ভব হবে। যখন আপনি কোন ওয়েবসাইটের হোমপেজ ভিজিট করেন, তো আপনি একেবারে রুট ফোল্ডারে অবস্থান করেন। মানে আপনি একদম শুরুর ফোল্ডারে অবস্থান করেন। তারপরে আপনি আলাদা লিঙ্ক ভিজিট করার মাধ্যমে আলাদা ফোল্ডার গুলো অ্যাক্সেস করতে পারেন।

এখন একটি ওয়েবপেজের প্রধান কাঠামো কি দ্বারা গঠিত হয়? অবশ্যই এইচটিএমএল কোড দ্বারা। আপনি এই ওয়েবপেজটি ব্রাউজারে লোড করেছেন আর সুন্দর ডিজাইন করা পেজটি থেকে আর্টিকেলটি উপভোগ করতে পাড়ছেন। কিন্তু এই পেজে তো শুধু টেক্সট নেই, আরো অনেক ফাইল রয়েছে এবং অনেক কোড রয়েছে। আপনি এই পেজকে পেজ রুপে দেখতে পেলেও, আপনার ব্রাউজার কিন্তু একে অন্যভাবে দেখতে পায়, তারপরে কোড থেকে আপনাকে ওয়েবপেজ রেন্ডার করে দেখায়। যেকোনো ওয়েবপেজ ব্রাউজারে লোড করার পরে “View Page Source” অপশনটি ক্লিক করলেই ঐ পেজটির কোড গুলো দেখতে পাবেন। যাই হোক, এর মানে হচ্ছে, ওয়েব সার্ভারের মধ্যে অনেক ফোল্ডার রয়েছে এবং প্রত্যেকটি ফোল্ডারের মধ্যে একটি করে ওয়েবপেজ রয়েছে, এগুলোর ডাইরেক্ট লিঙ্ক ভিজিট করার মাধ্যমে আপনি ঐ পেজটি লোড করতে পারেন।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একটি ওয়েবপেজ যদি আপনি যেভাবে দেখছেন সত্যি সেরকমের না হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তো সেই কোড গুলো লিখতে হয়, ব্রাউজারে সেই আদেশ গুলো দিতে হয়, তারপরে সে ওয়েবপেজটি ঐভাবে প্রদর্শিত করতে সাহায্য করে তাই না? যদি আপনি এই পেজটির সোর্স কোড দেখেন, তাহলে বুঝতে পাড়বেন এখানে শতশত কোড ব্যবহার করা হয়েছে, এর মানে এগুলো আপনাকে কোডিং করে এইচটিএমএল ফাইল তৈরি করতে হয়, তারপরে সেটিকে ওয়েব সার্ভার ফোল্ডারে রেখে আসতে হয়, তারপরে ঐ ফাইলটির হট লিঙ্ক ব্যবহার করে পেজটি লোড করা সম্ভব হয়।

বন্ধু এবার আমরা আর্টিকেলের মূল বিষয়ে চলে এসেছি। এখানেই ওয়ার্ডপ্রেস বা এরকম ওয়েবসাইট বিল্ডার সফটওয়্যার গুলো অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে উঠে। ওয়ার্ডপ্রেস মূলত আপনাকে একটি ইউজার ইন্টারফেস প্রদান করে যেখানে আপনি শুধু কনটেন্ট লিখবেন, কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার সেটিকে স্বয়ংক্রিয় এইচটিএমএল পেজে কনভার্ট করে দেবে, অর্থাৎ আপনাকে ম্যানুয়াল ভাবে হাজার লাইন কোডিং করে একেকটি পেজ বানাতে হবে না। কিন্তু যদি এইচটিএমএল পেজ নিজে তৈরি করেন, সেক্ষেত্রে কোডিং প্রয়োজনীয়। যেহেতু একটি স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার ব্যবহার করে পেজ গুলো তৈরি করছেন, তাই এখানে কোডিং একদমই প্রয়োজনীয় নয়। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার মনে হবে, আপনি যেন আপনার কম্পিউটারের ওয়ার্ড প্রসেসিং সফটওয়্যারে কিছু লিখছেন আর সেটা স্বয়ংক্রিয় ওয়েবপেজে কনভার্ট হয়ে যাচ্ছে।

ওয়ার্ডপ্রেস হল PHP ও MySQL ভিত্তিক একটি ওপেন সোর্স ওয়েব – কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। একে কম্পিউটারের লোকাল হোস্টে বা ইন্টারনেট হোস্টিং সার্ভিস এর মাধ্যমে ওয়েব সার্ভারে ইনস্টল করা যায়। ২০০৩ সালের ২৭ মে ম্যাট মুলেনওয়েগ এবং মাইক লিটেল ওয়ার্ডপ্রেসকে রিলিজ করেন।

কেন ওয়ার্ডপ্রেস?

আপনারা যারা ইতিমধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করেন, তাদের ধারনা আছে নিশ্চয়ই ওয়ার্ডপ্রেসকে কতভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে যারা নতুন রয়েছেন, অনেক সময় প্রশ্ন করেন ; কেন ওয়ার্ডপ্রেস? অনেক সময় তারা ওয়ার্ডপ্রেসকে কেবল ব্লগিং প্লাটফর্ম হিসেবে ভুল করে ফেলেন। সে কারনে বলে রাখি, ওয়ার্ডপ্রেস হল ভার্সেটাইল তথা বহুমূখ কার্যক্ষমতা সম্পন্ন ওয়েব CMS। এখানে CMS বলতে বোঝায় হল Content Management System।

আপনি যেমন ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে একটি সাধারন ব্লগ বানাতে পারবেন, তেমনি বিভিন্ন ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে মোবাইল অ্যাপলিকেশনও বানাতে পারবেন। চিন্তা নেই,আমরা এই সিরিজে ধীরে ধীরে এসব কাভার করব, কিভাবে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে নানারকম ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন এসব কিছু। ওয়ার্ডপ্রেস এর সবচেয়ে সেরা দিক হল ওয়েব কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম হিসেবে এর মত ফ্লেক্সিবল আর কোনোটি নেই! আর এ কারনেই যারা ওয়েবসাইটের ফিল্ডে আসে তাদের অন্যতম পছন্দ থাকে ওয়ার্ডপ্রেস। সাম্প্রতিক একটি জরিপ থেকে দেখা গেছে যে,ইন্টারনেটের ২২.৫ শতাংশ ওয়েবসাইটই ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা চালিত।

সম্পূর্ন ফ্রী

ওয়ার্ডপ্রেস এর জনপ্রিয়তার আরও একটি বড় কারন হল এটি সম্পূর্ণ ফ্রী। মানুষ তাদের হোস্টিং বা সার্ভারে এই ওয়ার্ডপ্রেসকে ফ্রীতে ইনস্টল ও ব্যবহার করতে পারে। এমনকি ওয়ার্ডপ্রেসের সোর্স কোডকে নিজের মত করে কাস্টমাইজেশন করে ব্যবহার করতেও কোন বাধা নেই। এ কারনে ওয়ার্ডপ্রেস এর তৈরিকারক প্রতিষ্ঠান “অটোমেটিক” কে দিল দরিয়া বলা যায়।

ওয়ার্ডপ্রেসে তো প্রিমিয়াম অসাধারন অসাধারন থীম ব্যবহার করা যায়ই, পাশাপাশি ২৬০০ এর মতন ফ্রী থীম বিদ্যমান। একইভাবে পেইড বহু প্লাগিন থাকলেও ৩১০০০ এর বেশি ফ্রী প্লাগিনস রয়েছে। এর মানে হচ্ছে, আপনাকে ওয়েবসাইট ম্যানুয়াল ভাবে কোডিং করে ডিজাইনও করতে হবে না। আগে থেকেই কোন ডেভেলপার ডিজাইন তৈরি করে রেখেছে, আপনি জাস্ট ডিজাইন পছন্দ করুণ আর ইন্সটল করে নিন, অনেকটা অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে থিম বা লঞ্চার সেট করার মতো। আর প্ল্যাগইন ব্যবহার করে ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করতে পাড়বেন, এতে কোন কোডিং প্রয়োজনীয় হবে না। যেমনটা আপনার ফোনে অ্যাপ ইন্সটল করার মাধ্যমে অনেক ফ্যাংশন যুক্ত হয়ে যায়।

আর এই ওয়ার্ডপ্রেসকে ব্যবহার করতে হলে আপনার দরকার একটি ডোমেইন এবং ওয়েব হোস্টিং।  [এই সিরিজে ডোমেইন ও হোস্টিং নিয়েও বিস্তারিত আর্টিকেল আসবে। আপনি জানতে পারবেন ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য কোন হোস্টিং সেরা] ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রী তথা ওপেন সোর্স হওয়ার কারনে, এটি একটি কমিউনিটি সফটওয়্যার। পৃথিবী জুড়ে বহু সেচ্ছাসেবী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে,ফ্রী থীম তৈরি, প্লাগিন তৈরি, ডকুমেন্টেশন আপডেট, ওয়ার্ডপ্রেস ট্রানস্লেট করে দেয়ার মাধ্যমে একে উন্নত করে যাচ্ছে।

WordPress.com Vs. WordPress.org

অনেকে WordPress.com এবং WordPress.org কে একই মনে করেন। তবে এই দুটি একই কোম্পানির হলেও, সার্ভিস একই নয়।

WordPress.org কে বলা হয় আসল ওয়ার্ডপ্রেস। এখানে অফিসিয়াল সাইট থেকে ওয়ার্ডপ্রেসটিকে ডাউনলোড করে সেলফ হোস্টেড সার্ভারে, নিজস্ব ডোমেইন সহ সেটাপ করতে হয়। আমরা এই সিরিজে মূলত WordPress.org নিয়েই আলোচনা করব। ওয়ার্ডপ্রেস এর যতরকম সুবিধা তা এতে ব্যবহার করা যায়, ওয়ার্ডপ্রেসকে এক্সট্রা কোনো টাকা না দিয়েই। মেম্বারশীপ সাইট থেকে শুরু করে, ই কমার্স সাইট এতে তৈরি করা যায়।

অন্যদিকে, WordPress.com ওয়ার্ডপ্রেসের পুরোপুরি একটি পেইড প্রোগ্রাম। প্রথমে অনেকে এতেই ঢুকে পড়েন এবং wordpress.com সাব ডোমেইন দিয়ে ফ্রী সাইট খুলে বসেন। তবে এতে আসল ওয়ার্ডপ্রেসের সব সুবিধা পেতে মাসে ২০০০ টাকার মতো খরচ করতে হবে। যেটাকে বলা হয় ওয়ার্ডপ্রেসের বিজনেস সার্ভিস। আনলিমিটেড টাইম ডোমেইন ও সার্ভার সব ওয়ার্ডপ্রেস থেকেই দেয়া হবে, সাথে সাথে সবসময় পাওয়া যাবে ওয়ার্ডপ্রেসের সাপোর্ট টিমের ২৪ ঘন্টার সাপোর্ট। তবে বড় বড় নিউজ মিডিয়া যেমনঃ টাইমস ও কোম্পানি ব্যাতিত কেউ তেমন এটি ব্যবহার করে না। পার্সোনাল ব্লগারদের ক্ষেত্রে এটা একদম বাজে, কেননা টাকা আয় করতে পারবেন, অর্থাৎ বিজ্ঞাপন সেবাগুলো ব্যবহার করতে পারবেন না। wordpress.com এর একটি ফ্রী সেবাও রয়েছে তবে তা একই কাজের না। আমরা পরে আরও জানব, এই বিষয়ে আরও জানতে চাইলে নিচে কমেন্টে জানাতে পারেন। যাই হোক, এটা ভেবে নিবেন wordpress.com আপনার আমার জন্য না। আমাদের জন্য WordPress.org

ওয়ার্ডপ্রেস কতটা সহজ?

ওয়ার্ডপ্রেসের আরেকটা প্লাস পয়েন্ট হল, ওয়ার্ডপ্রেস এর ইন্টারফেস খুবই সহজ। সহজেই মানুষ বুঝে ফেলতে পারবে, কঠিন তেমন কিছু নেই আর সবচেয়ে বড় কথা কোন কোডিং স্কিল লাগে না। আমরা পরবর্তীতে এই সিরিজে এইসব নিয়ে আলোচনা করব। আসলে অনেকে নতুন, তারা বলেন ওয়েবসাইট খুলব, ওয়েব ডিজাইন জানিনা, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট বুঝিনা, কোডিং পারিনা। ভাই চিন্তার কিছু নেই—আপনার জন্য আছে ওয়ার্ডপ্রেস। এখানে আপনিও একটি প্রোফেশনাল ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন, আপনার শুধু সম্পূর্ণ ইন্টারফেস সম্পর্কে পরিচিত হতে হবে এবং কিছু কার্যকলাপ আয়ত্ত করতে হবে আর কিছু না। ওয়ার্ডপ্রেসের মতো আরো সিএমএস রয়েছে আর তাদের মধ্যে জুমলা আরেকটি জনপ্রিয় সিএমএস, তবে ওয়ার্ডপ্রেসই বেস্ট।

আশা করি ওয়ার্ডপ্রেস কি, এটা দিয়ে আপনি কি করবেন এ বিষয়ে ধারনা পেলেন। পরবর্তী সিরিজে আরও নতুন আপনার জানা বা অজানা কিছু সম্পর্কে আর্টিকেল পাবেন। আশা করি এই সিরিজের ফলে আপনিও হয়ে উঠবেন একজন ওয়েবসাইট এক্সপার্ট তথা ওয়ার্ডপ্রেস গীক। এই সিরিজ থেকে একটি ওয়ার্ডপ্রেস পাওয়ারড ওয়েবসাইট বানানোর এতো খুঁটিনাটি নিয়ে আলোচনা করা হবে, আপনি সম্পূর্ণ আনাড়ি হলেও এই সিরিজ অনুসরণ করে গীক হতে বাধ্য হয়ে যাবেন। আজকের বেসিক পর্ব এখানেই শেষ করছি, অবশ্যই আপনার যেকোনো প্রশ্ন নিচে কমেন্ট করুণ আর হ্যাঁ, পোস্টটি বেশি বেশি শেয়ার করা কিন্তু আপনার দায়িত্ব!

Images: Shutterstock.com

About the author

stuff04@wirebd

Add comment

Categories