কেন একটি সেকেন্ডারি ম্যালওয়্যার স্ক্যানার অত্যন্ত প্রয়োজনীয়?

অবশ্যই নিরাপত্তার খ্যাতিরে আপনার উইন্ডোজ কম্পিউটারে আপনি অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহার করেন। লেটেস্ট অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম সাথে লেটেস্ট আপডেটও অ্যাপ্লাই করে রেখেছেন, পিসি স্ক্যান করে সকল ম্যালওয়্যার রিমুভ করে দিয়েছেন আর চিন্তা করছেন, ব্যাস আপনি সবচাইতে সুরক্ষিত। কিন্তু যখন ইন্টারনেট ব্রাউজার খুলে কিছু সার্চ করবেন, দেখেছেন গুগল উধাও হয়ে গেছে, কোন এক অচেনা সার্চ ইঞ্জিন থেকে সার্চ হচ্ছে। আরে হচ্ছে টা কি? —ঠিক এই জন্যই আপনার কম্পিউটারে আরেকটি ম্যালওয়্যার স্ক্যানার থাকা প্রয়োজনীয়, যেটা সেকেন্ডারি অপিনিওন স্ক্যানার হিসেবে কাজ করবে। দুনিয়ার কোন অ্যান্টিভাইরাস বা অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার প্রোগ্রাম শুধু নিজে একাই স্বয়ং সম্পূর্ণ নয়। সেকেন্ডারি ম্যালওয়্যার স্ক্যানার প্রোগ্রাম সকল বিষয় গুলোকে আবার দ্বিতীয়বার স্ক্যান করে, যদি প্রাইমারী অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম কোন কিছুকে ডিটেক্ট করতে না পারে, সেকেন্ডারি অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সেটাকে ডিটেক্ট করতে সাহায্য করে।

বেশিরভাগ মানুষ মনে করে সিঙ্গেল অ্যান্টিভাইরাস/অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার টুলই যথেষ্ট, কিন্তু সেটা আসলে ভুল ধারণা। অনেক অ্যান্টিভাইরাস দেখি সাথে বিল্ডইন অ্যান্টিম্যালওয়্যার ও ধারণ করে, কিন্তু তারপরেও আপনার একটি সেকেন্ডারি ম্যালওয়্যার স্ক্যানার প্রয়োজনীয়, কেনোনা সেটি একটি আলাদা সফটওয়্যার যার অ্যালগরিদম এবং সিগনেচার ডাটাবেজ আলাদা হয়ে থাকে। আজকের ম্যালওয়্যার গুলো অত্যন্ত স্মার্ট হয়ে থাকে, তাই অ্যান্টিভাইরাস গুলোর চোখে ফাঁকি দেওয়া খুব একটা মুশকিলের কাজ নয়। এমনটাও হতে পারে, আপনার পিসি কেনার সময় থেকেই ম্যালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত!


সেকেন্ডারি ম্যালওয়্যার স্ক্যানার কেন প্রয়োজনীয়?

পূর্বে অ্যান্টিভাইরাস বনাম অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার নামক একটি আর্টিকেলে আমি এই দুইটিরই কিছু কী-ফিচার তুলে ধরে ছিলাম। আসলে আগেই বললাম, বিভিন্ন অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম বিভিন্ন ম্যাথড ব্যবহার করে স্ক্যানিং সম্পূর্ণ করে থাকে। একেক জনের অ্যালগরিদম এবং ভাইরাস ডিটেকশন সিস্টেম আলাদা আলাদা হয়ে থাকে। যেখানে কিছু অ্যান্টিভাইরাস শুধু মাত্র নির্দিষ্ট কিছু ভাইরাস ডিটেক্ট করার ক্ষমতা রাখে, সেখানে কিছু অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার রুটকীট ডিটেকশনের উপর বেশি গুরুত্ব প্রদান করে থাকে।

রুটকীট গুলোকে বিশেষকে ডিটেক্ট করা অনেক মুশকিলের কাজ, কেনোনা এগুলো ফার্মওয়্যার বা হার্ডওয়্যার ড্রাইভারের মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে। আজকের দিনে অনেক অ্যান্টিম্যালওয়্যার টুল রয়েছে, কিন্তু নির্দিষ্ট কোন একটা কে নির্বাচন করার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ম্যালওয়্যার প্রস্তুতকারী’রা নিজেরায় ফেইক অ্যান্টিম্যালওয়্যার তৈরি করে, যেগুলো নিজেই ম্যালওয়্যার হিসেবে কাজ করে, এগুলোকে স্ক্র্যুওয়্যার বলা হয়। যেকোনো অ্যান্টিম্যালওয়্যার প্রোগ্রাম ব্যবহার শুরুর আগে অবশ্যই গুগল করে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেবেন যে ঐটা স্ক্যাম নয়তো , তারপরেই ব্যবহার করবেন!

আমি ম্যালওয়্যার বাইটসকে হাইলি রেকমেন্ড করি, এর ফ্রী ভার্সনটিও অনেক কাজের জিনিষ। যদি প্রো ভার্সন ব্যবহার করার টাকা না থাকে, অবশ্যই ফ্রী ভার্সনটি ব্যবহার করতে দ্বিধাবোধ করবেন না। অনেক টেক ওয়েবসাইট সরাসরি এটিকে সেকেন্ডারি ম্যালওয়্যার স্ক্যানার হিসেবে রেকমেন্ড করে থাকে। আসলে এই টুলটিকে তৈরিই এমনভাবে করা হয়েছে যাতে এটি প্রাইমারী অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রামের সাথে মিলেমিশে কাজ করতে পারে। তবে রিয়াল টাইম প্রোটেকশন পাওয়ার জন্য অবশ্যই এর প্রো ভার্সনটি কিনে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে।

আমার আরেকটি পছন্দের সেকেন্ডারি অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার প্রোগ্রাম হচ্ছে হিটম্যান প্রো! এই টুলটি সত্যিই অনেক আধুনিক এবং এটি ক্লাউড নির্ভর টেকনিক ব্যবহার করে ম্যালওয়্যার স্ক্যানিং সম্পূর্ণ করে থাকে। এই টুলটির আরেকটি সুবিধাজনক বিষয় হচ্ছে, এটি অত্যন্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে ম্যালওয়্যার স্ক্যানিং সম্পূর্ণ করতে পারে। এছাড়াও আরো কিছু স্ক্যানার রয়েছে, যেগুলোকে অন্য স্ক্যানার ব্যবহার করার আগে ট্র্যায় করে দেখতে পারেন।

১। Sophos Virus Removal Tool
২। Norton Power Eraser
৩। Kaspersky Security Scan
৪। Stinger (from McAfee)
৫। Trend Micro House Call


তো ব্যাস এই ছিল একটি কুইক আর্টিকেল, যেখানে আমি বর্ণনা করেছি কেন আপনার অবশ্যই একটি সেকেন্ডারি অপিনিওন ম্যালওয়্যার স্ক্যানার ব্যবহার করা প্রয়োজনীয়! আপনার যেকোনো প্রশ্নে অবশ্যই আমাকে নিচে কমেন্ট করে জানান! আপনি কোন অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার প্রোগ্রামটি ব্যবহার করেন, সেটাও জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!

Images: Shutterstock.com

About the author

তাহমিদ বোরহান

আমি তাহমিদ বোরহান, বেশিরভাগ মানুষের কাছে একজন প্রযুক্তি ব্লগার হিসেবে পরিচিত। ইন্টারনেটে বাংলায় টেক কন্টেন্ট এর বিশেষ অভাব রয়েছে, তাছাড়া উইকিপিডিয়ার কন্টেন্ট বেশিরভাগ মানুষের মাথার উপর দিয়েই যায়। ২০১৪ সালে প্রযুক্তি সহজ ভাষায় প্রকাশিত করার লক্ষ্য রেখেই ওয়্যারবিডি (পূর্বের নাম টেকহাবস) ব্লগের জন্ম হয়! আর এই পর্যন্ত কয়েক হাজার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক আর্টিকেল প্রকাশিত করে বাঙ্গালীদের টেক লাইফ আরো সহজ করার ঠেকা নিয়ে রেখেছি!

সারাদিন প্রচুর পরিমাণে গান শুনি আর ইউটিউবে র‍্যান্ডম ভিডিও দেখি। ওয়ার্ডপ্রেস, ক্লাউড কম্পিউটিং, ভিডিও প্রোডাকশন, এবং ইউআই/ইউএক্স ডিজাইনের উপরে বিশেষ পারদর্শিতা রয়েছে। নিজের গল্প, মানুষের গল্প, আর এলোমেলো টপিক নিয়ে ব্যাক্তিগত ব্লগে লিখি। খাওয়া আর ঘুম আমার আরেক প্যাশন!

Add comment

Categories