আজকের দিনে সংগীত উপভোগ করতে ভালোবাসেন না, এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুর্লভ। সময়ের সাথে সাথে আমাদের যেমন মিউজিকের প্রতি ভালোবাসা বেড়েছে ঠিক তেমনি ভাবে মিউজিক উপভোগ করার পদ্ধতিও পরিবর্তন হয়েছে। প্রথমে কলের গানে মিউজিক তারপরে রেডিও আর ক্যাসেট প্লেয়ার। মিউজিক উপভোগ করা কখনোই এতো মজার ছিলোনা যতোক্ষণ পর্যন্ত না ডিজিটাল ফরম্যাটে সিডি (কমপ্যাক্ট ডিস্ক) প্লেয়ার আমাদের সামনে আসে। আর এখন কম্পিউটার থেকে শুরু করে স্মার্টফোন, আইপড, এম্পিথ্রি প্লেয়ার, টিভি, হোম থিয়েটার ইত্যাদি সকল মিউজিক উপভোগ করার যন্ত্রে ডিজিটাল ফরম্যাটে মিউজিক চলে। আর যখনই ডিজিটাল মিউজিক বা স্পীকারের কথা আসে তখনই স্টেরিও, স্যারাউন্ড সাউন্ড (Surround Sound) ইত্যাদি টার্ম গুলো সামনে উন্মোচিত হয়। আপনি যদি মুভি পাগল হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই দেখে থাকবেন —মুভির ডিভিডির গায়ে ডলবি ডিজিটাল (Dolby Digital), ডিটিএস (DTS), বা টিএইচএক্স (THX) অডিও উল্লেখ্য থাকে। আবার আপনার কম্পিউটারের সাউন্ড ড্রাইভার প্রোগ্রামে ২.১, ৫.১, ৬.১, ৭.১ অডিও আউটপুট অপশন অবশ্যই দেখে থাকবেন। তো এগুলো আসলে কি, কীভাবে কাজ করে, হাই কোয়ালিটির মিউজিকের জন্য কতটা মূল্য রাখে ইত্যাদি বিষয় গুলো নিয়ে আলোচনা করায় আজকের আর্টিকেলের প্রধান বিষয় বস্তু। আজকের বিষয় গুলো নিয়ে আমি বেশ উত্তেজিত এবং নিশ্চয় আপনিও! তো চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক…
এই আর্টিকেলের বিষয়বস্তু সমূহ
স্যারাউন্ড সাউন্ড স্ট্যান্ডার্ড
ডিজিটাল অডিওতে প্রথমে আমরা মনো (Mono) সাউন্ড সিস্টেমের সাথে পরিচিত হই। মনো সাউন্ড সিস্টেম একটি সিঙ্গেল চ্যানেল অডিও সিস্টেম; যেখানে সকল অডিওকে কেবল একটি মাত্র চ্যানেলের মাধ্যমেই ব্রডকাস্ট করা যায়। তবে মনো সাউন্ড সিস্টেমে একসাথে একাধিক সাউন্ড স্পীকার থাকতে পারে, তবে সব স্পীকার দিয়ে একসাথে একই অডিও ব্রডকাস্ট হয়। এই সাউন্ড সিস্টেমের সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে এক সাথে সকল স্পীকারে একই অডিও ব্রডকাস্ট হওয়াই সকলে একই কোয়ালিটির সাউন্ড পায় এবং সাউন্ড লেভেল প্রত্যেক শ্রোতার কাছে এক থাকে। এজন্য কোন ব্যক্তিতা সভাই মনো সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। বেশিরভাগ স্মার্টফোনের স্পীকারও মনো হয়ে থাকে। মনো সাউন্ড সিস্টেম স্পিস শোনার জন্য বেস্ট।
এরপর আসে স্টেরিও (Stereo) সাউন্ড সিস্টেম; যেখানে সম্পূর্ণ স্বাধীন আলাদা দুইটি অডিও সিগন্যাল চ্যানেল থাকে। এই দুইটি অডিও চ্যানেলে ভিন্ন ভিন্ন সাউন্ড লেভেল থাকতে পারে এবং এরা একত্রে মিলে মূল অডিও বা সোর্স থেকে আসা অডিওর আউটপুট প্রদান করে। বেশিরভাগ স্পীকার সাথে আপনারটিও হয়তো স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেমে চলে। বেসিক স্টেরিও অডিও সিস্টেমকে আমরা ২.০ এবং ২.১ মানেও চিনি। ২.০ অডিও সিস্টেমে ডুয়াল চ্যানেলের দুইটি স্পীকার থাকে এবং ২.১ অডিও সিস্টেমে দুইটি স্পীকারের পাশাপাশি ১টি আলাদা সাব-ওয়াফার (Subwoofer) থাকে। কোন মিউজিক কনসার্টে যেখানে মিউজিক্যাল যন্ত্রপাতির শব্দ এক চ্যানেলে এবং শিল্পীর কণ্ঠ আরেক চ্যানেলে ব্রডকাস্ট করার প্রয়োজনীয়তা পড়ে সেখানে স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেম অসাধারণ অডিও কোয়ালিটি দিতে পারে। ২.০ বা ২.১ অডিও সিস্টেমে শ্রোতাকে একদম মাঝখানে থাকা প্রয়োজনীয়, না হলে শ্রোতা শুধু একটি চ্যানেলই ভালো শুনতে পাবে। সাধারন মিউজিক উপভোগ করার জন্য ২.১ অডিও সিস্টেম এক অসাধারণ মিউজিক কোয়ালিটি দিতে পারে। আজকের বেশিরভাগ স্পীকারের পাশাপাশি হেডফোন গুলোও স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেমে চলে। আসল স্টেরিও মিউজিক কোয়ালিটি পাওয়ার জন্য সঠিকভাবে রাইট/লেফট (R/L) স্পীকার কনফিগার করা প্রয়োজনীয়।
৫.১ স্যারাউন্ড সাউন্ড সবচাইতে কমন এবং জনপ্রিয় স্যারাউন্ড সাউন্ড স্ট্যান্ডার্ড বা ফরম্যাট। হোম থিয়েটার রিসিভারে দুইটি চ্যানেল বিশিষ্ট স্টেরিও অ্যাপ্লিফায়ার থাকার পাশাপাশি আরো আলাদা চ্যানেল থাকে। ৫.১ সাউন্ড সিস্টেমে মোট ৬টি চ্যানেল থাকে; এদের মধ্যে ৫টি ফুল ব্যান্ডউইথ চ্যানেল থাকে যেগুলো ৩-২০,০০০ হার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে চলে এবং একটি লো ফ্রিকোয়েন্সির সাব-ওয়াফার থাকে যা ৩-১২০ হার্জের সাউন্ড উৎপন্ন করে। ৫টি প্রধান স্পীকারের মধ্যে তিনটি সামনে —রাইট, লেফট, সেন্টার এবং ২টি পেছনের স্যারাউন্ড স্পীকার থাকে। বেসিক হোম থিয়েটারের ৫.১ সাউন্ড সিস্টেমে স্টেরিও সাউন্ড সিস্টেমের মতোই রাইট এবং লেফট স্পীকার দুটি মুভি স্ক্রীনের দিক অনুসারে কাজ করে; যেমন যদি স্ক্রীনের বাম দিক দিয়ে ট্রেন যায় তবে বাম স্পীকারে এবং ডান দিক দিয়ে ট্রেন গেলে ডান স্পীকারে সাউন্ড পাওয়া যায়। সেন্টার বা মাঝখানে থাকা স্পীকার সাধারনত মুভি ডায়লগ, মিউজিক ভোকাল, এবং সাপোর্ট সাউন্ডের জন্য ব্যবহৃত হয়। পেছনের দুইটি স্যারাউন্ড স্পীকার স্পেশাল সাউন্ড ইফেক্ট প্লে করে, যাতে মনে হয় আপনি সেই মুভির ভেতরে ভার্চুয়ালি অবস্থান করছেন। সাব-ওয়াফারটি লো ফ্রিকোয়েন্সিতে চলে এবং সাউন্ড ট্র্যাক থেকে বিশেষ করে মিউজিক বেস (Bass) প্লে করে। ৫.১ সাউন্ড সিস্টেমের উদাহরণ হলো ডলবি ডিজিটাল ৫.১ বা ডিটিএস ৫.১।
৬.১ হোম থিয়েটার সিস্টেম ৫.১ সাউন্ড সিস্টেমের সকল সুবিধা প্রদান করার পাশাপাশি ১টি বেশি স্পীকার থাকার সুবিধা প্রদান করে। ৬.১ সাউন্ড সিস্টেমে পেছনে আরেকটি আলাদা সেন্টার স্পীকার থাকে, সামনে তিনটি স্পীকার থাকে, পেছনে দুটি স্যারাউন্ড স্পীকার এবং একটি ডেডিকেটেড সাব-ওয়াফার থাকে। পেছনের সেন্টার স্পীকারটি সামনের সেন্টার স্পীকারের ন্যায় কাজ করে। ৬.১ সাউন্ড সিস্টেম অনেকটা ৫.১ এর মতো হলেও এতে আরোবেশি হাই কোয়ালিটির সাউন্ড পাওয়া যায়, সাথে আপনাকে আরো ট্রূ ভার্চুয়াল ফিলিং প্রদান করে। মনে করুন স্ক্রীনের ডান পাশ দিয়ে কোন গাড়ি বাম পাশে ঘুরে গেল, এই অবস্থায় ৬.১ সাউন্ড সিস্টেমে একদম অরিজিনাল সাউন্ড ইফেক্ট পেতে পারেন। তবে এই স্পেশাল সাউন্ড ইফেক্ট গুলো ঠিক তখনই পাবেন যখন সোর্স অডিও ৬.১ সাউন্ড সিস্টেম অনুসারে এনকোড করা থাকবে।
৬.১ সাউন্ড সিস্টেমে যেমন ৫.১ হতে একটি স্পীকার বেশি ছিল ঠিক তেমনি ৭.১ সাউন্ড সিস্টেমে আরো একটি স্পীকার বেশি থাকে। সামনের তিনটি চ্যানেল, দুইটি স্যারাউন্ড সাউন্ড স্পীকার, পেছনে দুইটি চ্যানেল এবং একটি সাব-ওয়াফার। ৫.১ এবং ৬.১ এর মতো এর সব চ্যানেল গুলোতেই ফুল ব্যান্ডউইথ থাকে শুধু সাব-ওয়াফার ছাড়া। এই বাড়তি পেছনের স্পীকার আপনাকে সবচাইতে বেস্ট সাউন্ড ইফেক্ট দিতে সক্ষম। বেশিরভাগ ৭.১ সাউন্ড সিস্টেম রিসিভারের সাথে টিএইচএক্স অডিও ইনহ্যান্সার থাকে, এটি মুভি বা মিউজিক থেকে অডিও প্রসেস করে বেস্ট কোয়ালিটি প্রদান করার চেষ্টা করে। তবে ৭.১ সাউন্ড সিস্টেম ঠিকঠাক মতো সেটআপ করা কষ্টের ব্যাপার। এই স্যারাউন্ড সাউন্ড শুধু তার জন্যই যে বেস্ট থেকে ১ ধাপও নিচে নামতে পছন্দ করেন না।
৫.১, ৬.১, ৭.১ চ্যানেল স্যারাউন্ড সাউন্ড
বর্তমান স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম মার্কেটে তিনটি প্রদান খেলোয়াড় হলো ডলবি ডিজিটাল, ডিটিএস, এবং টিএইচএক্স। এই ক্ষেত্রে প্রত্যেকের কিছু আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং যেগুলো আপনার জানা প্রয়োজন। তাই আপনার নেক্সট হোম থিয়েটার সিস্টেম কেনার আগে চলুন বিভিন্ন স্যারাউন্ড সাউন্ড স্ট্যান্ডার্ড বা ফরম্যাট সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ডলবি প্রো লজিক
কম্পিউটার পিসি প্রস্তুতকারী কোম্পানিরা যতোদিন পর্যন্ত না ৫.১, ৬.১, এবং ৭.১ স্যারাউন্ড সাউন্ডকার্ড তৈরি করতে আরম্ভ করেছিল—তার আগে প্রো লজিক অত্যন্ত জনপ্রিয় পিসি গেমিং সাউন্ড সিস্টেম হিসেবে পরিচিত ছিল। সত্যি কথা বলতে এটি আসল স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেম নয়; এটি ভার্চুয়াল স্যারাউন্ড অডিও প্রদান করে। প্রো লজিকে দুইটি স্পীকার এবং একটি সাব-ওয়াফার থাকে। তবে পরে প্রো লজিক II বেড় হয় এবং সেখানে ৫টি স্পীকারে বিভক্ত হয়ে যায়। তবে প্রো লজিক II ও আসল স্যারাউন্ড অডিও প্রদান করে না; পাঁচটি স্পীকার থেকে আপনি আলাদা সাউন্ড পাবেন না, শুধু রাইট এবং লেফট চ্যানেল আলাদা সাউন্ড প্রদান করতে সক্ষম।
তাহলে নিশ্চয় জিজ্ঞাস করবেন, “তাহলে প্রো লজিক নিয়ে কাজটা কি?”। দেখুন সাধারন মিউজিক প্লে এবং গেমিং সাউন্ড সাধারন কোন স্টেরিও ২.১ স্পীকারে উপভোগ করার চাইতে প্রো লজিক আপনাকে অনেক ভালো কোয়ালিটি দিতে সক্ষম। ৫টি স্পীকারে আলাদা আলাদা চ্যানেল না থাকলেও বেশি স্পীকার থাকার কারণে এক ভার্চুয়াল স্যারাউন্ড অডিও তৈরি হয়, যেটা অনেক ভালো।
তবে ডলবি প্রো লজিক IIx ৫.১ এবং ৭.১ অডিও প্রসেস করার ক্ষমতা রাখে এবং অবশ্যই আলাদা আলাদা চ্যানেলে। প্রো লজিক IIz সামনের স্পীকার গুলোকে উচ্চতায় রাখার ফিচার প্রদান করে, এতে স্ক্রীনে বিমান উড়ার সময় কিংবা গাছ ভেঙ্গে পড়ার সময় আপনাকে দারুন ইফেক্ট দিতে পারে।
ডলবি ডিজিটাল
ডলবি ডিজিটাল হলো লজিকের সফল ভার্সন। হ্যাঁ, এটি ট্রু স্যারাউন্ড অডিও প্রদান করে। ডলবি ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বিল্ড-ইন অডিও ডিকোডার থাকে; যেটা অডিও সোর্স থেকে অডিও প্রসেস করে ৫টি আলাদা চ্যানেলে সেন্ড করে (সামনের তিনটি স্পীকার, পেছনের দুইটি স্যারাউন্ড স্পীকার এবং একটি সাব-ওয়াফার)। ডলবি ডিজিটাল ফরম্যাটে ৫.১ হোম থিয়েটার সিস্টেম থেকে ৫টি স্পীকার সম্পূর্ণ আলাদা চ্যানেলে কাজ করে এবং আলাদা আলাদা অডিও প্রদান করতে পারে। তবে এখানেও ৫.১ অডিও সিস্টেম শুধু তখনই পরিপূর্ণভাবে সম্ভব যখন সোর্স অডিও ৫.১ সিস্টেমে এনকোড করা থাকবে।
আগেই বলে রাখছি ডলবি ডিজিটাল কিন্তু লসি ফরম্যাট। অডিওর সাইজ কমিয়ে কোন ডিভিডি বা যেকোনো মিডিয়াতে স্টোর করার জন্য অডিও কে কম্প্রেস করা হয়, এতে সাইজ কমার সময় কিছুটা কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায় তবে সাইজ অনেক কমে যায়। ডাটা কম্প্রেসন আর্টিকেলটি থেকে এব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ডলবি ডিজিটালের আরো প্রকারভেদ রয়েছে, যেমন— ডলবি ডিজিটাল ইএক্স এবং ডলবি ডিজিটাল প্লাস; তবে এই দুই প্রকারই অনেকটা ডলবি ডিজিটালের মতোই। তবে এতে হালকা কিছু পার্থক্য রয়েছে, যেমন— ডিজিটাল ইএক্স এ আরো একটি স্বাধীন চ্যানেল (৬.১) এবং ডিজিটাল প্লাসে দুইটি স্বাধীন চ্যানেল থাকে (৭.১)। যা ৬.১ এবং ৭.১ স্যারাউন্ড সাউন্ড সমর্থন করে। ডলবি ডিজিটাল এর আলাদা চ্যানেল গুলো থেকে একদম আসল অডিও এক্সপেরিএন্স দিতে সক্ষম সাথে পরিষ্কার ডায়লগ, ইমেজিং, প্রশস্ত, এবং ব্যস্তব কোয়ালিটির অডিও প্রদান করে।
আরেকটি ডলবি ডিজিটাল স্ট্যান্ডার্ডের নাম হলো “ডলবি ট্রু এইচডি“; তবে এর মান ট্রূ এইচডি হলেও এটিও কম্প্রেসড অডিও ব্যবহার করে। তবে এটি লসিলেস অডিও কম্প্রেসন টেকনিক ব্যবহার করে কাজ করে। লসিলেস অডিও কম্প্রেসন টেকনিকে অডিও সাইজ কমে গেলেও এর কোয়ালিটি কমে না। তবে লসি কম্প্রেসনের মতো এর ফাইল সাইজ এতোটা কমানো সম্ভব হয় না বলে এটি সাধারন ডিভিডি বা সিডিতে আঁটেনা, ফলে ব্লুরে ডিস্কে একে সংরক্ষিত করা হয় কারণ এর ক্যাপাসিটি অনেক বেশি। তবে অনেক রিসিভার ট্রু এইচডি সমর্থন করে না।
ডিটিএস
ডলবি ডিজিটালের মতো ডিটিএস সাউন্ড সিস্টেমও ৫.১ অডিও সমর্থন করে এবং এটিও লসি কম্প্রেসন ব্যবহার করে। ডিটিএস প্রযুক্তিতেও বিল্ড-ইন রিসিভার এবং ডিকোডার মজুদ থাকে। তবে এটি ডলবি ডিজিটালের তুলনায় কম কম্প্রেসন ব্যবহার করে এবং হাই বিটরেটে কাজ করে, ফলে আরো চমৎকার পরিষ্কার অডিও কোয়ালিটি দিতে পারে। তবে এর আসল কোয়ালিটি বা ডিটিএস এবং ডলবি ডিজিটালের মধ্যে ঠিক তখনই পার্থক্য করতে পারবেন যখন আপনি ভালো মানের স্পীকার ব্যবহার করবেন। বর্তমানে বেশিরভাগ অডিও রিসিভারই ডলবি ডিজিটাল এবং ডিটিএস একসাথে সমর্থন করে। তবে বাজারের খুব কম মুভি বা গেমিং ডিস্কে ডিটিএস অডিও এনকোড করা থাকে, কেনোনা এই প্রযুক্তি এখনো নতুন এবং অনেক কোম্পানিই এখনো এই স্ট্যান্ডার্ড সমর্থন করে না। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডলবি ডিজিটাল ফরম্যাট অডিও পেয়ে যাবেন।
টিএইচএক্স
ডলবি ডিজিটাল বা ডিটিএস এর মতো টিএইচএক্স কোন স্যারাউন্ড সাউন্ড স্ট্যান্ডার্ড নয়; এটি মূলত অডিও এবং ভিডিও কোয়ালিটি ইনহ্যান্স করে সর্বউচ্চ কোয়ালিটি প্রদান করার একটি প্রযুক্তি। অত্যন্ত হাই-এন্ড রিসিভার গুলোতে টিএইচএক্স থাকতে দেখতে পাওয়া যায়। ডলবি ডিজিটাল বা ডিটিএস এর মতো এটি শুধু অডিও পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয়, আগেই বলেছি, এটি ভিডিও ও ইনহ্যান্স করে। তো আপনার সাউন্ড সিস্টেমে যদি টিএইচএক্স প্রযুক্তি থাকে তবে আপনার সাউন্ড এক্সপেরিএন্স নেওয়ার কোয়ালিটি আরো কয়েক গুনে বেড়ে যেতে পারে।
শেষ কথা
এই আর্টিকেলে বিভিন্ন সাউন্ড সিস্টেম এবং স্যারাউন্ড সাউন্ড স্ট্যান্ডার্ড নিয়ে আলোচনা করেছি। যারা মুভি দেখতে পছন্দ করেন কিংবা গেমিং করতে পছন্দ করেন অথবা যদি আপনি হোম থিয়েটার কেনার কথা ভেবে থাকেন তবে এই আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনার কাজে আসবে। তাছাড়া এতক্ষণে আপনি নিশ্চয় জেনে গেছেন, আপনার কম্পিউটারে ২.১, ৫.১, ৬.১, ৭.১ অডিও অপশন গুলো থাকার মানেটা কি। আশা করি আজকের টপিকটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে, তাই অবশ্যই এটিকে শেয়ার করুন এবং আপনার যেকোনো মতামত নিচে কমেন্ট করে জানান।
Images: Shutterstock.com